১ বছরের আগে বাচ্চাকে গরুর দুধ দিতে নিষেধ করা হয়। তবে খাটি দুধের অপ্রতুলতা, দুধে পানির মিশ্রন এবং দুধ বাড়ানোর জন্য গরুরকে বিভিন্ন হরমোন বা রাসায়নিক খাওয়ানোর কারণে আমাদের দেশে ২ বছরের নিচের বাচ্চাকে গরুর দুধ দিতে নিরুৎসাহিত করা হয়।
১ বছরের আগে গরুর দুধ কেন দেয়া যাবে নাঃ
গরুর দুধে প্রোটিন আছে বুকের দুধের থেকে অনেক বেশি। ফলে এই দুধ অনেক ভারী এবং হজমে কঠিন।
গরুর দুধে ল্যাক্টোজ নামক সুগার থাকে যেটায় অনেক বাচ্চার ইনটলারেন্স থাকে ফলে পাতলা পায়খানা, বমি, পেটে গ্যাস ইত্যাদি সমস্যা হয়ে থাকে।
গরুর দুধে যথেষ্ট ইসেনশিয়াল ফ্যাটি এসিড থাকে না এবং কোন লাইপেজ থাকে না। বুকের দুধে উভয় পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে।
বুকের দুধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ার জন্য ইমিউনোগ্লোবিন (IgA) এবং ল্যাক্টোফেরিন থাকে, গরুর দুধে যেটা একদম অনুপস্থিত।
বুকের দুধে মায়ের খাবারের উপড় নির্ভর করে পর্যাপ্ত ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি থাকে যেটা গরুর দুধে অপর্যাপ্ত।
বুকের দুধের তুলনায় গরুর দুধে আয়রন রয়েছে অনেক কম। ফলে গরুর দুধ খাওয়া বাচ্চারা রক্ত স্বল্পতায় ভুগে অনেক বেশি।
গরুর দুধে সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস রয়েছে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি ফলে ছোট বাচ্চার কিডনীতে অত্যাধিক চাপের সৃষ্টি করে।
অনেক বাচ্চার গরুর দুধে এলার্জি থাকে। এসব বাচ্চাও গরুর দুধের এলার্জি জনিত ডায়ারিয়া, বদহজম, বমি, পেট ব্যাথা ইত্যাদি সমস্যায় ভুগতে পারে।
ল্যাকটেটিং মা ১ বছরের আগে গরুর দুধ খাবেন না
অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমাদের মায়েরা বাচ্চাকে গরুর দুধ না খাওয়ালেও নিজেরা গরুর দুধ খেয়ে থাকেন। একটা প্রচলিত ব্যাপার হলো দুধ খেলে বুকে দুধ আসবে। এটা আংশিক সত্য এই ভাবে যে এটা তরল এবং পুষ্টিকর খাবার। কিন্তু গরুর দুধ না খেয়ে অন্য পুষ্টকর খাবার খেলে এবং পর্যাপ্ত পানি খেলেও একই কাজ হয়ে যায়।
আপনারা জানেন যে মায়ের খাবার সামান্য পরিমাণে বুকের দুধের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়। এজন্যই ল্যাকটেটিং মায়ের জন্য অত্যাধিক চা, কফি, এলার্জিক খাবার, ডার্ক চকোলেট, আন সেইফ ঔষধ ইত্যাদি খাওয়া নিষেধ। একই ভাবে গরুর দুধও না খাওয়া উত্তম। গরুর দুধে অনেক বাচ্চার এলার্জি থাকে, গরুর দুধের ল্যাক্টোজ অনেক বাচ্চার জন্য সমস্যার কারণ হয়। ফলে বমি, পায়খানার সমস্যা, পেটে গ্যাস, পেট ব্যাথা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
২ বছর থেকে গরুর দুধ এবং ৮ মাস থেকে দুগ্ধজাত খাবার দিবেন
২ বছর হয়ে গেলে বাচ্চার জন্য গরুর দুধ একটি সুষম খাবার। বাচ্চাকে প্রতিদিন বয়স অনুসারে এক কাপ থেকে এক গ্লাস গরুর দুধ খাওয়াবেন। গরুর দুধের ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিন বাচ্চার বেড়ে উঠার জন্য খুবই সহায়ক।
দুই বছরের ছোট বাচ্চাকে গরুর দুধ না দেয়া গেলেও দুগ্ধজাত বিভিন্ন খাবার দেয়া যাবে। ৮ মাস থেকেই বিভিন্ন দুগ্ধজাত খাবার (দই, চিজ, বাটার, ঘি ইত্যাদি) দিতে পারবেন। এ খাবার গুলো হাই ক্যালরী খাবার এবং বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি ও বিকাশে সহায়ক। দই এ প্রচুর ভালো ব্যাক্টেরিয়া থাকে যেটা বাচ্চার অন্ত্রের ভালো ব্যাক্টিরিয়াকে চাংগা করে এবং হজম শক্তি বাড়ায়।
১ বছর হয়ে গেলে বাচ্চাকে নিয়মিত গরুর দুধ দেয়া যাবে যদি-
খাটি গরুর দুধ হয়
গরুরকে হরমোন বা রাসায়নিক খাওয়ানো না হয়।
দুধে পানির মেশানো না হয়।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ঃ
অত্যাধিক জ্বাল দিয়ে দুধ ঘন করে খাওয়াবেন না। এতে হজমের সমস্যা হতে পারে। ১-২ জ্বাল দিয়ে খাওয়াবেন।
পানি মিশিয়ে দুধের গুণাগুণ নষ্ট করবেন না। দুধে পানি মেশানো হলে এর পুষ্টিগুণ কমে যাবে।
সকল বাচ্চার যে গরুর দুধ হজম হবে এমন নয়। দুধ হজমে সমস্যা হলে এবং বমি, পাতলা পায়খানা হলে বন্ধ রাখবেন।
গরুর দুধ বা গরুর দুধ থেকে তৈরী ফর্মুলা থেকে এলার্জি হতে পারে। এ বিষয়ক আর্টিকেল গ্রুপে দেয়া আছে। পড়ে নিবেন।
MBBS, MS (Pediatric Surgery)
SCHP (Paediatrics) Australia, CCD
Child Specialist & Pediatric Surgeon
চেম্বারঃ
আল-মারকাজুল ইসলামী হাসপাতাল
২১/১৭, বাবর রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।
সিরিয়ালের জন্য কল করুনঃ 01755515556 (দুপুর ৩ টায়)
সিটি কেয়ার জেনারেল হাসপাতাল
২৩/৬, রুপায়ন শেলফোর্ড, লেভেল ৮, শ্যামলী। (শিশু মেলার বিপরীতে)
সিরিয়ালের জন্য কল করুনঃ 09642400300
অনলাইন কনসালটেশনঃ m.me/cdc.dhaka.bd