জন্ম থেকে ৩ মাস পর্যন্ত বাচ্চারা দিন ও রাত মিলিয়ে সাধারণত ১৫-১৭ ঘন্টা ঘুমায়। ৩০ মিনিট থেকে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত ছোট্ট ছোট্ট ঘুমে তাদের সারা দিনে মোট ১৫-১৭ ঘন্টা ঘুম হয়। প্রতি ৩০-৪০ মিনিট পর পর তারা জেগে উঠতে পারে। তারা যত বড় হতে থাকে ঘুম ক্রমশ কমতে থাকে এবং ছোট ঘুমের সময় বাড়তে থাকে।
৩-৬ মাস বয়সী বাচ্চা দিন ও রাত মিলিয়ে ১৫-১৬ ঘন্টা ঘুমায়।
৬-৯ মাস বয়সী বাচ্চা দিন ও রাত মিলয়ে ১৪-১৫ ঘন্টা ঘুমায়। এই বয়সী বাচ্চারা সাধারণত দিনে ২-৩ বার ঘুমায়। বাকিটা রাতে ঘুমায়।
৯-১২ মাস বয়সী বাচ্চা সাধারণত ১৩-১৪ ঘন্টা ঘুমায়। এর মধ্যে সধারণত ২-৩ ঘন্টা দিনে, বাকিটা রাতে।
১-২ বছর বয়সী বাচ্চা সাধারণত ১২-১৩ ঘন্টা ঘুমায়। এর মধ্যে দিনের বেলায় ২-৩ ঘন্টা, বাকিটা রাতে।
প্রি-স্কুল (২-৪ বছর) বয়সে ১১-১২ ঘন্টা, স্কুল গোয়িং (৫-১২ বছর) বয়সে ৯-১০ ঘন্টা, টিনেজার (১৩-১৮ বছর) বয়সে ৮-৯ ঘন্টা এবং এডাল্ট মানুষ এর ৭-৮ ঘন্টা ঘুম প্রয়োজন।
৬ মাস পর্যন্ত শিশুর প্রতিদিন ১৪-১৬ ঘণ্টার ঘুম হবে, এবং এই ঘুমের বেশিরভাগই ভাঙা ভাঙা হবে। যেহেতু বাচ্চা দিনে ঘুমের বড় একটা সময় পাবে, তাই তার রাতে ঘুমের প্যাটার্নটি অনিশ্চিত হতে পারে। রাতে কম ঘুমানো বাচ্চার জন্য অস্বাভাবিক নয়। বাচ্চাদের পেট ২-৩ ঘন্টা পর পর খালি হয়ে যায়, ফলে ঘুমও অনিয়মিত হতে পারে।
আপনার শিশুর জীবনের প্রথম পর্যায়ে তার জন্য ভাল ঘুমের অভ্যাস তৈরী করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঘুমানোর অভ্যাসের কিছু টেকনিক আছে। প্রতিদিন একই সময় ওকে দুধ খাওয়ায় ঘুমের জন্য রেডি করতে হবে। এরপর রুমের দরজা বন্ধ করে সব কাজ বন্ধ রেখে বাচ্চাকে নিয়ে ঘুমাতে যাবেন। কোন শব্দ, মোবাইল, কোন কাজ করা যাবেনা। রুমে খুব হাল্কা আলো রাখবেন। ঘুমানোর সময় ঘুমপাড়ানি গান শোনানো, গল্প, এবং চুমু দেয়া মায়ের সাথে শিশুর বন্ধন শক্তিশালী করে। শিশুর উত্তেজনা হ্রাস করে এবং ঘুমাতে সাহায্য করে। এভাবে প্রতিদিন একই অভ্যাস করতে হবে। একদিনে বা ১০ দিনে না হলেও একই ভাবে প্রতিদিন চেষ্টা করলে বাচ্চার ঘুমের অভ্যাস তৈরী হবে। এর জন্য ধৈর্য ধরতে হবে।
কিছু জিনিস খেয়াল রাখতে হবে বাচ্চার পেট যেন ভরা থাকে। ৭-৮ মাসের বড় বাচ্চার জন্য ভালো রাতের খাবার নিশ্চিত করুন। রাতের খাবারে চর্বি জাতীয় খাবার রাখলে বাচ্চার পেট বেশিক্ষন ভরা থাকবে। চেষ্টা করবেন ৮ মাসের বাচ্চা যেন সন্ধার পর না ঘুমায় এবং একটু ছোট বাচ্চা যেন রাত ৮ টার পর না ঘুমায়। বাচ্চাকে এই সময়টা খেলতে দিন। ফিজিক্যাল একটিভিটি বাচ্চাকে ক্লান্ত করবে, একই সাথে বাচ্চার ক্ষুধা বৃদ্ধি করবে। খেয়াল রাখবেন বাচ্চার যেন কোন কষ্ট না থাকে। পেটে গ্যাসের সমস্যা থাকলে সমধান করতে হবে। উপযুক্ত পরিবেশ দিতে হবে। শীত বা গরম এর খেয়াল রাখতে হবে। আরামদায়ক কাপড় পরিধান করাতে হবে।
বাচ্চা ঠিক মত ঘুমাচ্ছে না। কি কি বিষয় খেয়াল করবেন?
আপনার শিশুর ক্ষুধা লেগেছে কিনা?
আপনার শিশু অস্বস্তি হতে পারে। যেমন পেটে গ্যাস, পেট ব্যাথা। গরম লাগা, ঠান্ডা লাগা। প্রস্রাব বা পায়খানে লেগেছে। দাঁত বেরোনোর কারণে ব্যথা হতে পারে। ডায়াপার ভর্তি হয়ে অস্বস্থি হচ্ছে, ইত্যাদি।
আপনার শিশু হয়তো আপনার শরীরের সান্নিধ্য পেতে চায়।
ঘুমের উপকারিতাঃ
পর্যাপ্ত ঘুম বাচ্চার ব্রেনের বিকাশের জন্য জরুরী। পর্যাপ্ত ঘুম হলে বাচ্চার ব্রেন টিস্যু বৃদ্ধি লাভ করে। নিউরনের সিনাপসিস (এক নিউরনের সাথে অন্য নিউরনের জয়েন) এর জন্যও পর্যাপ্ত ঘুম দরকার।
ঘুমের মধ্যেই গ্রোথ হরমোন রিলিজ হয় বিধায় বাচ্চার বিকাশ এবং বেড়ে উঠার জন্যও পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন। ঘুম আশংকা জনক ভাবে কমে গেলে বাচ্চার গ্রোথ বাধাগ্রস্থ হতে পারে।
রিসার্চে দেখা গেছে পর্যাপ্ত ঘুম মানুষের বুদ্ধি, শেখার ক্ষমতা, মেধা, স্মরণ শক্তি বাড়ায়। অন্যদিকে অপর্যাপ্ত ঘুম বিরক্তি, মানসিক চাপ, ভুলে যাওয়া, শেখার ক্ষমতা হ্রাস, মানসিক অবসাদ এর কারণ হতে পারে।
অনেক বাচ্চার ঘুম কম থাকে। তবে পর্যাপ্ত ঘুম খুব দরকার বাচ্চার ব্রেন এর পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং বিকাশ এর জন্য। অনেক বাচ্চার ঘুম হালকা, অল্প শব্দে ঘুম ভেংগে যায়, তাই খেয়াল রাখবেন বাচ্চা দিনের বেলা ঘুমানোর উপযুক্ত পরিবেশ পাচ্ছে কিনা।
ঘুমের মধ্যে ছোট্ট শিশুটির মাথা ঘেমে যাচ্ছে কেন?
এটা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। কারন ঘুমের মধ্যে প্রচুর গ্রোথ হরমোন রিলিজ হচ্ছে এবং ব্রেনের ডেভলপমেন্ট হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় প্রচুর রক্ত চলাচল প্রয়োজন বিধায় ব্রেনের রক্ত চলাচল বেড়ে যায়। যার ফলে মাথা ঘামে।
MBBS, MS (Pediatric Surgery)
SCHP (Paediatrics) Australia, CCD
Child Specialist & Pediatric Surgeon
চেম্বারঃ
আল-মারকাজুল ইসলামী হাসপাতাল
২১/১৭, বাবর রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।
সিরিয়ালের জন্য কল করুনঃ 01755515556 (দুপুর ৩ টায়)
সিটি কেয়ার জেনারেল হাসপাতাল
২৩/৬, রুপায়ন শেলফোর্ড, লেভেল ৮, শ্যামলী। (শিশু মেলার বিপরীতে)
সিরিয়ালের জন্য কল করুনঃ 09642400300
অনলাইন কনসালটেশনঃ m.me/cdc.dhaka.bd