অনেক মায়েরা বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর সময় বারবার স্তন পরিবর্তন করেন। আবার অনেকে বাচ্চাকে ঘন্টায় ঘন্টায় অল্প পরিমাণ দুধ খাওয়ান। এতে বাচ্চার কি সমস্যা হচ্ছে এই আর্টিকেলে সেটাই লিখবো।
আগের পোষ্টে লিখেছি ফোর মিল্ক ও হাইন্ড মিল্ক সম্পর্কে। ফোর মিল্কে পানি এবং ল্যাকটোজ (কার্বোহাইড্রেট) বেশি থাকে, চর্বি কম থাকে। হাইন্ড মিল্কে চর্বির পরিমাণ বেশি থাকে। এখন আমরা জানবো কেন এই চর্বি বাচ্চার জন্য এত দরকার।
আমাদের দেহের সকল কোষ চর্বির (লিপিড) মেমব্রেন দিয়ে তৈরী সেটা অনেকেই জানেন। দেহ গঠনে চর্বির গুরুত্ব অপরিসীম। এটা ভিন্ন টপিক। আমাদের আলোচনার বিষয়, বুকের দুধে চর্বির অভাবে গ্যাস এবং পায়খানার সমস্যা কিভাবে হচ্ছে, মোটকথা বাচ্চার পেটের কি সমস্যা করছে চর্বিহীন পানি ও ল্যাকটোজ সমৃদ্ধ দুধ।
চর্বি অন্ত্রে খাবারের গতিকে কমায়। লক্ষ্য করবেন আপনি চর্বি যুক্ত খাবার বেশি খেতে পারবেন না। আর খেলেও সেটা বেশিক্ষণ পেটে থাকে। এটার কারণও এটাই যে চর্বি আমাদের পাকস্থলী এবং অন্ত্রে খাবারের গতি হ্রাস করে। সহজ ভাবে মনে রাখতে পারেন, পাতলা পানি কোন পাইপের ভিতর দিয়ে সহজে এবং তাড়াতাড়ি চলে যাবে। কিন্তু ঘন এবং চর্বি যুক্ত জিনিস কোন পাইপের ভিতর দিয়ে যেতে বেশি সময় লাগবে।
মানুষ এবং অন্যান্য ম্যামল এর দুধে থাকে ল্যাকটোজ নামের কার্বোহাইড্রেট (আমিষ)। এটা একটা চিনির মত বস্তু। যা পরিপাক করতে প্রয়োজন হয় ল্যাকটেজ নামক এনজাইম।
চর্বিযুক্ত দুধ যেহেতু পাকস্থলি এবং অন্ত্রে বেশিক্ষন থাকে তাই পর্যাপ্ত ল্যাকটেজ এনজাইম উৎপন্ন হতে পারে এবং তা এই দুধের ল্যাকটোজকে পরিপাক করতে যথেষ্ট সময় পায়। কিন্তু চর্বিহীন পাতলা দুধ তাড়াতাড়ি পাকস্থলী ছাড়িয়ে নিচের দিকের অন্ত্রে চলে যায়। ফলে পর্যাপ্ত ল্যাকটেজ এনজাইম উৎপন্নও হতে পারে না, আবার দুধে বিদ্যমান ল্যাকটোজকে পরিপাক করার পর্যাপ্ত সময়ও পায়না।
ফলে কি হয়? অসম্পূর্ণ পরিপাককৃত দুধ বিহদান্ত্রে চলে যায়। এবং সেখানে গিয়ে এই দুধের ফার্মেন্টেশন / গাজন হয়। এবং অন্ত্রে বেশি বেশি গ্যাস উৎপন্ন হয়। সাথে সবুজ পায়খানা / ফেনা যুক্ত খারাপ পায়খানা হতে পারে। অনেকে বাচ্চার এই পায়খানা নিয়ে ডাক্তারের কাছে যান। অনেকে এন্টিবায়েটিক খাওয়ান। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়না। বাচ্চার সমস্যা চলতেই থাকে। এসব বাচ্চা পেটে ব্যাথা নিয়ে মোচড়া মোচড়ি করতে পারে। কান্নাকাটি করতে পারে।
আপনার বাচ্চার পায়খানা যদি হলুদ ও স্বাভাবিক হয় এবং বাচ্চা যদি ভালো থাকে তাহলে ধরে নিতে পারেন আপনার বাচ্চা সঠিক পরিমাণে চর্বিযুক্ত দুধ পাচ্ছে। সবুজ পায়খানার একমাত্র কারণ ল্যাকটোজ ওভারলোড নয়। অন্য কারণ গুলো সবুজ পায়খানা আর্টিকেলে দেয়া আছে।
বাচ্চা বেশিক্ষণ দুধ খাচ্ছে না। কি করতে পারেন?
দুধ খাওয়ানোর বিভিন্ন পইজিশন চেষ্টা করে দেখুন। হতে পারে আপনার বর্তমান পজিশন আপনার বাবুর জন্য আরামদায়ক না।
বাচ্চা দুধ খেতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে যায় এবং ঘুমিয়ে যায়। এমন হলে বাচ্চাকে জাগিয়ে তুলুন। কানের পিছনে আপনার আঙ্গুল দিয়ে সুড়সুড়ি দিন হালকা করে ঘষা দিন। স্তন ধরে হালকা ঝাকি দিয়ে খেতে বলুন।
পজিশন এবং এটাচমেন্ট ঠিক আছে কিনা চেক করুন। এটাচমেন্ট ঠিক না থাকলে বাচ্চা ঠিক ভাবে দুধ পাবে না, তাই সে লম্বা সময় খেতে চাইবে না।
MBBS, MS (Pediatric Surgery)
SCHP (Paediatrics) Australia, CCD
Child Specialist & Pediatric Surgeon
চেম্বারঃ
আল-মারকাজুল ইসলামী হাসপাতাল
২১/১৭, বাবর রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।
সিরিয়ালের জন্য কল করুনঃ 01755515556 (দুপুর ৩ টায়)
সিটি কেয়ার জেনারেল হাসপাতাল
২৩/৬, রুপায়ন শেলফোর্ড, লেভেল ৮, শ্যামলী। (শিশু মেলার বিপরীতে)
সিরিয়ালের জন্য কল করুনঃ 09642400300
অনলাইন কনসালটেশনঃ m.me/cdc.dhaka.bd