প্রথমেই জরুরী সময় কাজে লাগবে এমন কিছু ঔষধ এর ডোজ দিচ্ছি।
ব্যাথার ঔষধঃ
সিরাপ ফ্লামেক্স ১০০ মিলিগ্রাম প্রতি চামচে (৫ মিলিতে)
৬ মাসের বড় বাচ্চাদের দেয়া যাবে (ভরা পেটে)
৬-৭ কেজিঃ ৩ মিলি ৩-৪ বেলা
৮-৯ কেজিঃ ৪ মিলি ৩-৪ বেলা
১০-১২ কেজিঃ ৫ মিলি (১ চামচ) ৩-৪ বেলা
১৩-১৫ কেজিঃ ৬.৫ মিলি ৩-৪ বেলা
১৬-১৮ কেজিঃ ৮ মিলি ৩-৪ বেলা
১৯-২০ কেজিঃ ৯ মিলি ৩-৪ বেলা
২১-২৪ কেজিঃ ২ চামচ (১০ মিলি) ৩-৪ বেলা
২৫+ কেজিঃ আড়াই চামচ ৩-৪ বেলা
৩০+ কেজিঃ ৩ চামচ ৩-৪ বেলা
এন্টি-হিস্টামিনঃ
এলাট্রল ড্রপ / সিরাপ
১-৫ মাসের বাচ্চাঃ এলাট্রল ড্রপ ০.৫ মিলি করে ২ বেলা।
৬ মাস - ১ বছরঃ এলাট্রল ড্রপ ১ মিলি করে ২ বেলা
১-২ বছরঃ এলাট্রল সিরাপ হাফ চামচ ২ বেলা।
২-১১ বছরঃ এলাট্রল সিরাপ ১ চামচ ২ বেলা।
পুড়ে যাওয়া / বার্ণ
আগুন বা গরম পানির সোর্স থেকে বাচ্চাকে দ্রুত সরিয়ে আনুন
জামা কাপড়ে আগুন বা গরম পানি থাকলে সেটা খুলে ফেলুন।
রানিং ট্যাপ ওয়াটারে (ঠান্ডা) ৫-১০ মিনিট পোড়া জায়গাটি ধরে থাকুন। এটা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ।
১০ মিনিট পর পানি থেকে সরিয়ে এনে একদম পরিষ্কার কাপড় দিয়ে হালকা চাপ দিয়ে পানি মুছে ফেলুন এবং বার্ণা/বার্ননল মলম মোটা করে লাগিয়ে দিন।
ব্যাথার ঔষধ ফ্লামেক্স সিরাপ এবং এন্টি-হিস্টামিন এলাট্রল উপড়ে উল্লেখিত ডোজ অনুসারে খাইয়ে দিন।
হাত, পা বা শরীরের যে অংশ পুড়েছে সেটা উচুতে রাখুন। যেমন হাতে পুড়লে দুটা বালিশ দিয়ে হাতটা উচু করে দেন। পা পুড়লে পায়ের নিচে বালিশ দিয়ে উচু করে দেন।
এসেস করুন পোড়া বেশি কিনা। যদি বেশি পোড়া হয় এবং মুখ, শ্বাস নালি, শরীরের যে কোন জয়েন্টে পুড়ে তবে দ্রুত হাসপাতালে নিবেন।
এর বাইরেও ইনফেকশন রোধে এন্টিবায়েটিক সিরাপ এবং মলম সহ আরো ঔষধ লাগবে বাচ্চার অবস্থা অনুসারে। তাই প্রাথমিক চিকিৎসার পর অবশ্যই ডাক্তার দেখাবেন।
উচু জায়গা থেকে পরে মাথায় ব্যাথাঃ
বাচ্চাদের বিছানা থেকে পরে যাওয়া খুবই কমন ঘটনা। তবে এতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বড় কোন সমস্যা হয়না। পরে গিয়ে মাথায় ব্যাথা পেলে যদি নিন্মের উপসর্গ গুলো থাকে তবে চিন্তিত হতে হবে এবং দ্রুত হাসপাতাল বা ডাক্তারের কাছে নিতে হবে।
অজ্ঞান হয়ে যাওয়া (অল্প সময়ের জন্য হলেও)
খিচুনী হওয়া।
বার বার বমি করা (২+ বার)
এসব সমস্যা না হলে যদি ব্যাথার জায়গাটা চিহ্নিত করা যায় তবে ৫ মিনিট উক্ত স্থানে বরফ ঘষবেন। এরপর প্রয়োজন মত প্যারাসিটামল বা ব্যাথার ঔষধ খাওয়াতে পারেন ১-৩ দিন।
শরীরে ব্যাথা পাওয়া / ছিলে যাওয়া / কেটে যাওয়াঃ
মাথা ছাড়া শরীরের অন্য কোথাও ব্যাথা পেলে প্রথমেই ব্যাথার জায়গাটি চিহ্নিত করতে হবে। ব্যাথার জায়গায় ৫ মিনিট বরফ ধরে রাখবেন। ব্যাথা বেশি মনে হলে দ্রুত ব্যাথার জায়গায় জেসোকেইন ২% জেল লাগিয়ে দিবেন। এরপর প্রয়োজন অনুসারে ব্যাথার ঔষধ সিরাপ ফ্লামেক্স উপড়ের ডোজে ১-৩ দিন খাওয়াতে পারেন। সামান্য কেটে গেলে বা চামড়া ছিলে গেলে ইনফেকশন প্রতিরোধের জন্য সেখানে নেবানল/নেবাজিন মলম লাগাবেন ৩ বেলা ৭-১০ দিন। শার্প কাট থাকলে এবং ফাকা হয়ে থাকলে সেলাই লাগতে পারে, সেজন্য ডাক্তার দেখাবেন। যদি জায়গাটা ফুলে যায় এবং মুভমেন্ট করতে কষ্ট হয় তবে সেখানে হাড়ে চিড়ে যাওয়া বা ফেটে যাওয়ার মত ঘটনা ঘটতে পারে, এছাড়া জয়েন্ট ডিস্লোকেশন থাকতে পারে। তাই সেক্ষেত্রে অবশ্যই বাচ্চাকে দ্রুত ডাক্তার দেখাবেন এবং এক্সরে করাবেন।
ভোমড়া / বোল্লা / পোকা কামড় দেয়াঃ
আমরা প্রায়ই বোল্লা বা এরকম বড় পোকা কামড়ানোর সমস্যায় পরি। এক্ষেত্রে দ্রুত ব্যাথার ঔষধ ফ্লামেক্স এবং এন্টি-হিস্টামিন এলাট্রল খাইয়ে দিবেন এবং পরবর্তিতে প্রয়জনে ডাক্তার দেখাবেন।
সর্দি / নাক দিয়ে পানি পরাঃ
বাচ্চাদের সর্দি একটি নিত্য নৈমিত্তিক সমস্যা। সর্দির জন্য উল্লেখিত ডোজে টোফেন সিরাপ খাওয়াতে পারেন ৭-১০ দিন বা প্রয়োজন মত আরো লম্বা সময়ও দেয়া যাবে। এছাড়া উপড়ে উল্লেখিত ডোজে এলাট্রল দিতে পারেন ৭ দিন।
টোফেন সিরাপ এর ডোজঃ
* ৪ কেজিঃ ১ মিলি ২ বেলা।
* ৬ কেজিঃ ১.৫ মিলি ২ বেলা
* ৮ কেজিঃ ২ মিলি ২ বেলা।
* ১০ কেজিঃ ২.৫ মিলি ২ বেলা।
* ১২ কেজিঃ ৩ মিলি ২ বেলা।
* ১৪ কেজিঃ ৩.৫ মিলি ২ বেলা।
* ১৬ কেজিঃ ৪ মিলি ২ বেলা।
* ১৮ কেজি এবং এর অধিকঃ ১ চামচ ২ বেলা।
[টোফেন না পেলে সিরাপ কিটি / কিটোফ/ প্রোজমা / ভালো ব্রান্ডের একই ঔষধ ব্যবহার করুন]
এছাড়া উল্লেখিত ডোজে এলাট্রল দিতে পারেন ৭ দিন
১-৫ মাসের বাচ্চাঃ এলাট্রল ড্রপ ০.৫ মিলি করে ২ বেলা।
৬ মাস - ১ বছরঃ এলাট্রল ড্রপ ১ মিলি করে ২ বেলা
১-২ বছরঃ এলাট্রল সিরাপ হাফ চামচ করে ২ বেলা।
২-৬ বছরঃ এলাট্রল সিরাপ ১ চামচ করে ২ বেলা।
৬ বছর+ঃ এলাট্রল সিরাপ দেড় চামচ করে ২ বেলা।
তবে যদি সাথে কাশি থাকে, জ্বর থাকে এবং সর্দি ঘন বা হলুদ হয় তবে এসব ইনফেকশনের লক্ষণ। এক্ষেত্রে অবশ্যই দ্রুত পূর্ণ চিকিৎসা করতে হবে।
নাক বন্ধঃ
নরসল ড্রপ ২-৩ ফোটা দৈনিক ২-৩ বার দিয়ে নাক পরিষ্কার করতে পারেন। নরসল একটি নরমাল স্যালাইন বিধায় প্রয়োজন হলে দৈনিক ২-৩ বারের বেশিও ব্যবহার করা যাবে। সকল বয়সেই এটা একই নিয়মে ব্যবহার করা যায়।
আফরিন ড্রপঃ ২ ফোটা করে ২ বেলা ৭ দিন দিতে পারেন (৬মাস+ বাচ্চার ক্ষেত্রে)
সর্দির জন্য নাক বন্ধ থাকলে সর্দির চিকিৎসা প্রয়োজন হবে।
কাশিঃ
বাচ্চাদের কাশির অনেক কারণ থাকতে পারে এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শুধু একটা ঔষধ দিয়ে কাশির চিকিৎসা হয়না। তবুও একদম প্রাথমিক অবস্থায় উপড়ে উল্লেখিত ডোজে টোফেন সিরাপ এবং এমব্রক্স / এমবোলিট ড্রপ বা সিরাপ (উভিয় একসাথে) খাওয়াতে পারেন ৫-৭ দিন । যদি এতে না কমে এবং বাড়তে থাকে তবে অপেক্ষা না করে দ্রুত পূর্ণ চিকিৎসা নিতে হবে।
এমব্রোক্স / এমবোলিট এর ডোজঃ
* ৬ মাস পর্যন্তঃ এমব্রক্স ড্রপ ০.৫ মিলি করে ৩ বেলা।
* ৭-১১ মাসঃ এমব্রক্স ড্রপ ১ মিলি করে ৩ বেলা।
* ১-২ বছরঃ এমব্রক্স সিরাপ হাফ চামচ করে ৩ বেলা।
* ২-৫ বছরঃ এমব্রক্স সিরাপ ১ চামচ করে ৩ বেলা।
* ৫-১০ বছরঃ এমব্রক্স সিরাপ দেড় চামচ করে ৩ বেলা।
* ১০+ বছরঃ এমব্রক্স সিরাপ ২ চামচ করে ৩ বেলা।
[এমব্রক্স না পেলে এমবোলিট / লাইটেক্স / মিউকোসল বা অন্য ব্রান্ডের একই ঔষধ ব্যবহার করুন]
গ্যাসের সমস্যায় প্রাথমিক করণীয়ঃ
গ্যাস, পেট ফাপা ইত্যাদি সমস্যায় প্রাথমিক ভাবে ড্রপ ফ্লাকল দিতে পারেন
ফ্লাকল / গ্যাসনিল ড্রপ এর ডোজঃ
* ০-৬ মাসঃ ০.৩ মিলি ৩-৪ বেলা
* ৭-১২ মাসঃ ০.৫ মিলি ৩-৪ বেলা
* ১-২ বছরঃ ১ মিলি ৩-৪ বেলা
* ২-১২ বছরঃ ২.৫ মিলি ৩-৪ বেলা
ডায়ারিয়াঃ
ডায়ারিয়া অনেক ভিন্ন ভিন্ন কারণে হয়ে থাকে এবং এদের চিকিৎসাও ভিন্ন ভিন্ন বিধায় এক্ষেত্রে বিস্তারিত হিস্ট্রি নিয়ে এর কারন সম্পর্কে অনুমান করে তারপর চিকিৎসা করতে হয়। এই হিস্ট্রি সঠিক ভাবে নেয়া এবং কারণ অনুমান করা অভিজ্ঞতার ব্যাপার। এজন্য ডায়ারিয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসা নিতে হবে। ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করার পূর্বের সময়টাতে প্রাথমিক ভাবে ওরস্যালাইন ও জিংক খাওয়াবেন। ওরস্যালাইন পানিশূন্যতা রোধ করে শিশুকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করে। ৫ মাসের নিচের শিশুদের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওরস্যালাইন শুরু করবেন না। সেক্ষেত্রে বেশি করে বুকের দুধ খাওয়াবেন।
* ওরস্যালাইন: ৫০০ মিলি পানিতে ১ প্যাকেট ওরস্যালাইন বানিয়ে প্রতিবার পায়খানার পর বাচ্চার যত ওজন তত চামচ করে খাওয়াবেন।
* জিংকঃ
১০ কেজির নিচেঃ হাফ চামচ করে ২ বেলা
১০ কেজির উপড়ঃ ১ চামচ করে ২ বেলা
৩০ কেজির উপড়ঃ ২ চামচ করে ২ বেলা
চুলকানি
শরীরে যেকোন চুলকানিতে উপড়ে উল্লেখিত ডোজে এন্টি-হিস্টামিন (এলাট্রল) খাওয়াতে পারবেন। এতে বাচ্চা সাময়িক আরাম পাবে এবং পরবর্তীতে প্রয়োজন অনুসারে ডাক্তার দেখাবেন। এন্টি-হিস্টামিন রোগের মূল চিকিৎসা নয়, শুধু মাত্র বাচ্চাকে কষ্ট থেকে সাময়িক মুক্তি দিবে।
বমি: বমির সমস্যা হলে এর কারণ বের করে চিকিৎসা করতে হয়। তবে প্রাথমিক ভাবে বমি বন্ধ করার জন্য সিরাপ ইমিস্টেট খাওয়াবেন খাওয়ার ৩০ মিনিট পূর্বে। ওজন অনুসারে ডোজঃ
৫ কেজি - ১.২ মিলি করে ৩ বেলা।
১০ কেজি - হাফ চামচ (২.৫ মিলি) করে ৩ বেলা।
২০ কেজি - ১ চামচ (৫ মিলি) করে ৩ বেলা।
অরুচিঃ
অরুচির অনেক কারণ থাকতে পারে। নিয়ম হচ্ছে কারণ বের করে চিকিৎসা করা। কমন কারণ গুলোর মধ্যে রক্ত স্বল্পতা, মুখে ঘা, মুখে বা গলায় থ্রাস বা ফাংগাল ইনফেকশন, কানে ইনফেকশন, পেটে ইনফেকশন, প্রস্রাবে ইনফেকশন, শরীরে অন্য কোন ইনফেকশন, কৃমির সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য অন্যতম।
প্রাথমিক ভাবে জিংক সিরাপ খাওয়াতে পারেন। তবে সমাধান না হলে অবশ্যই ভালো শিশু বিশেষজ্ঞ দেখানো উচিত হবে।
১০ কেজির নিচেঃ হাফ চামচ করে ২ বেলা ১ মাস।
১০ কেজির উপড়ঃ ১ চামচ করে ২ বেলা ১ মাস।
৩০ কেজির উপড়ঃ ২ চামচ করে ২ বেলা ১ মাস।
MBBS, MS (Pediatric Surgery)
SCHP (Paediatrics) Australia, CCD
Child Specialist & Pediatric Surgeon
চেম্বারঃ
আল-মারকাজুল ইসলামী হাসপাতাল
২১/১৭, বাবর রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।
রবি, মংগল ও বৃহ, বিকেল ৫ঃ০০ - ৭ঃ০০
সিরিয়ালের জন্য কল করুনঃ 01755515556
ইউনিএইড ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন
2-A/1, দারুস সালাম রোড, মিরপুর-১।
শনি, সোম ও বুধবার, সন্ধা ৭ঃ৩০ - ৯ঃ৩০
সিরিয়ালের জন্য কল করুনঃ 017333702755
অনলাইন কনসালটেশনঃ m.me/cdc.dhaka.bd