লম্বা সময় ডায়াপার পড়িয়ে রাখার কারণে ন্যাপি এরিয়ায় যে র্যাশ হয় সেটাই ডায়াপার র্যাশ নামে পরিচিত। এখনকার প্রায় সব বাচ্চাই ডায়াপার ব্যবহার করে এবং ডায়াপার র্যাশ দ্বারা কম বেশি সব বাচ্চাই আক্রান্ত হয়।
কিভাবে বুঝবেন?
জায়গাটা লাল হয়ে যাবে, কিছুটা ফোলা ভাব থাকতে পারে। এছাড়া সেখানে লাল লাল দানা দানা দেখা যেতে পারে। উপরোক্ত উপসর্গ ডায়াপার এরিয়ার দেখা গেলে বুঝে দিতে হবে এটা ডায়াপার র্যাশ। ডায়াপার র্যাশের কারণ, প্রতিরোধ এবং চিকিৎসা সংক্ষেপে দেয়া হলো।
কারণঃ
লম্বা সময় ভেজা থাকা ডায়াপার র্যাশের প্রধান কারণ।
অতিরিক্ত আদ্রতা স্কিনের বাইরের লেয়ারকে ক্ষতিগ্রস্থ করে।
প্রস্রাব এবং পায়খানায় কিছু ক্যামিক্যাল থাকে যা ইরিটেশন করে এবং ক্ষতিগ্রস্থ স্কিনের বাইরের লেয়ারে প্রদাহ, ফোলা ও লাল ভাব তৈরী করে।
ওয়াইপস এর অতিরিক্ত ব্যবহার করলে সমস্যা হতে পারে। এসব ওয়াইপসে ক্যামিক্যাল এজেন্ট থাকে যেটা ত্বকে মাইনর ক্রাক বা ফাটা তৈরী করে যেটা পরবর্তীতে ইনফেকশনের কারণ হয়।
ফাংগাল ইনফেকশনঃ ভেজা ও আদ্র ত্বকে ফাংগাল ইনফেকশন বেশি হয়ে থাকে। একই ভাবে ভেজা, আদ্র ও ক্ষতিগ্রস্থ পেলভিক ত্বকে খুব সহজেই ক্যানডীডা ইনফেকশন হতে পারে। ডায়াপার র্যাশেও প্রায় ক্ষেত্রেই ক্যানডীডা ইনফেকশন পাওয়া যায়।
প্রতিরোধঃ
ডায়াপার চেঞ্জঃ ভেজা ডায়াপারে বেশিক্ষণ বাচ্চাকে রাখা যাবে না। চেষ্টা করতে হবে ডায়াপার ভিজে গেলেই পরিবর্তন করে দিতে। এর সুনির্দিষ্ট কোন সময় সীমা নেই। এটা নির্ভর করবে বাচ্চার প্রস্রাবের উপড়। গড়পড়তা ভাবে বলা যায় ছোট বাচ্চার ক্ষেত্রে একটা ডায়াপার ৪ ঘন্টার বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ দেখা যায় ছোট বাচ্চারা অনেক বেশি প্রস্রাব করে থাকে। রাতের বেলা উঠে উঠে চেক করতে হবে বাচ্চার ডায়াপার ভেজা কিনা। রেগুলার চেক করতে করতে আপনি বুঝে যাবেন আপনার বাচ্চা কেমন প্রস্রাব করে এবং কত ঘন্টা পর আপনার বাচ্চার ডায়াপার চেঞ্জ করতে হবে। সাধারণত এই সময়টা দিনে এবং রাতে ভিন্ন হয়ে থাকে।
ভালো মানের ডায়াপারঃ চেষ্টা করতে হবে ভালো মানের ডায়াপার এবং একই ব্রান্ডের ডায়াপার ব্যবহার করা। তাতে সেই ডায়াপারের ধারণ ক্ষমতা সম্পর্কে আপনার ধারণা হয়ে যাবে।
পায়খানা করার সাথে সাথে পরিবর্তনঃ বাচ্চা ডায়াপারে পায়খানা করার সাথে সাথেই ডায়াপার পরিবর্তন করে দিতে হবে। নয়ত পায়খানার এসিড ডায়াপার এরিয়ার চামড়াকে ক্ষতিগ্রস্থ করে দিবে খুব সহজেই।
দিনের বেলা সীমিত ডায়াপারঃ দিনের বেলা ডায়াপার পড়ানোর সময় যতটা পারা যায় কমানোর চেষ্টা করতে হবে। খুব বেশি ডায়াপার ব্যবহারের প্রয়োজন হলে একটা ডায়াপার খোলার পর অন্য একটি ডায়াপার পড়ানোর মাঝে ৩০ মিনিট গ্যাপ মেইনটেন করবেন। এতে জায়গাটা বাতাস পাবে এবং শুকনা থাকতে সাহায্য করবে।
ওয়াইপস ব্যবহারে সতর্কতাঃ ওয়াইপস ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে। সম্ভব হলে ওয়াইপস পরিহার করে পানি ও বেবী সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে দিবেন। ওয়াইপস ব্যবহার করতেই হলে ভালো ব্রান্ডের ব্যবহার করবেন এবং যতটা কম ব্যবহার করা যায় ততই উত্তম।
চিকিৎসাঃ
ডায়াপার র্যাশের জন্য ৩-৪ বেলা ওয়ার্ম কমপ্রেশন দিবেন। এক কাপ কুসুম গরম পানিতে এক চামচ লবণ মিশিয়ে তুলোয় নিয়ে র্যাশের জায়গায় দিবেন প্রতি বেলা ৫ মিনিট করে। এই সময়টায় যত কম ডায়াপার পড়ানো যায় ততই ভালো। ডায়াপার ভেজা মনে হলে সাথে সাথে চেঞ্জ করবেন। এভাবে ৩ দিন অবজার্ব করবেন ভালো না হলে এসবের সাথে ফানজিডাল এইচসি ক্রিম দিবেন ২ বেলা ৭-১০ দিন। আশাকরি এতেই বাচ্চার ডায়াপার র্যাশের সমস্যা সমাধান হবে। কিছু ক্ষেত্রে সাথে ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন থাকতে পারে অথবা ডায়াপার র্যাশ না হলে অন্য কোন সমস্যা হতে পারে। যদি উপড়ে উল্লেখিত প্রাথমিক চিকিৎসায় সমস্যা না কমে বাড়তে থাকে তবে অবশ্যই ডাক্তার দেখাবেন।
MBBS, MS (Pediatric Surgery)
SCHP (Paediatrics) Australia, CCD
Child Specialist & Pediatric Surgeon
চেম্বারঃ
আল-মারকাজুল ইসলামী হাসপাতাল
২১/১৭, বাবর রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।
সিরিয়ালের জন্য কল করুনঃ 01755515556 (দুপুর ৩ টায়)
সিটি কেয়ার জেনারেল হাসপাতাল
২৩/৬, রুপায়ন শেলফোর্ড, লেভেল ৮, শ্যামলী। (শিশু মেলার বিপরীতে)
সিরিয়ালের জন্য কল করুনঃ 09642400300
অনলাইন কনসালটেশনঃ m.me/cdc.dhaka.bd